রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ অনুষ্ঠিত হলো ‘আন্তধর্মীয় সংলাপ ও সম্প্রীতি সম্মেলন’। “গড়ে তুলি সম্প্রীতির সংস্কৃতি” শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে বক্তারা একমত হন যে, ধর্মের মূল উদ্দেশ্য শান্তি প্রতিষ্ঠা, বিভেদ নয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। তিনি বলেন, প্রতিটি সত্তা অনন্য হলেও ভিন্নতার মাঝে মিল রয়েছে। ভিন্নতাকে স্বীকার করে একসঙ্গে চললেই পৃথিবীতে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
ভ্যাটিকানের আন্তধর্মীয় সংলাপবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রধান কার্ডিনাল জর্জ জাকোব কভোকাদ বলেন, “আমরা সবাই এক মানব পরিবারের অংশ। ধর্ম কখনোই বিভাজনের হাতিয়ার হতে পারে না; বরং এটি ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসার ভিত্তি।”
ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ কেভিন রেনডাল তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ বহুধর্মীয় সহাবস্থানের উজ্জ্বল উদাহরণ। তিনি বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকে দূরে সরে যাওয়া আজকের সংকটের মূল কারণ।
ইসলাম ধর্মের প্রতিনিধি অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন তার প্রবন্ধে ধর্মান্ধতার বিপদ তুলে ধরে বলেন, মানবতার জন্য প্রয়োজন ভালোবাসায় আলোকিত মানুষ।
হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নিত্যানন্দ চক্রবর্তী বলেন, ভ্রাতৃত্ব ও পারস্পরিক আস্থার মাধ্যমেই ঘৃণা দূর করে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
বৌদ্ধ প্রতিনিধি সুজিত কুমার বড়ুয়া উল্লেখ করেন, “মৈত্রী, করুণা ও সহমর্মিতা থেকেই সামাজিক ন্যায় ও ঐক্য শুরু হয়।”
খ্রিষ্টান ধর্মীয় নেতা ফাদার মার্কাস সলো কেউটা বলেন, ধর্মীয় সংলাপ শুধু আলাপ নয়, বরং পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্পর্ক উন্নয়নের পথ।
অনুষ্ঠানে প্রায় ৯৫০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে কূটনীতিক, মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
বক্তারা সবাই একমত হন, ধর্মের মূল উদ্দেশ্য মানবতার কল্যাণ, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সম্প্রীতির সংস্কৃতি গড়ে তোলা।